১৫/০৮/১৮, ওয়েবডেস্ক: আজকে রায়গঞ্জের এক বিরাট অংশের মানুষ তথা পরিবারে ব্যবহৃত হয় ‘ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড’ এর এলপিজি গ্যাস। রায়গঞ্জের অদূরেই এর বটলিং প্ল্যান্ট হওয়ার দরুন চটজলদি সিলিন্ডার পাওয়া এখন রোজকার বিষয় যদিও অনেকেই হয়তো জানেননা এই বটলিং প্ল্যান্ট তৈরির পেছনের ইতিহাসটা।
সময়টা নয়ের দশকের মাঝামাঝি। রাজধানী কলকাতার থেকে প্রায় ৪৫০কিলোমিটার দূরের উত্তরবঙ্গের এই ছোট্ট মফস্বল শহরে তখনো অনেক বাড়িতে সকাল বেলায় কয়লার উনুনের ধোঁয়া দেখাটাই স্বাভাবিক ঘটনা। এমনই এক সময়ে শহরের মধ্য মোহনবাটি এলাকার এক বর্ধিষ্ণু বামপন্থী- নাট্যমোদী পরিবারে হঠাৎ চাঞ্চল্য। বাড়িতে এসেছেন লম্বাটে গড়নের অসাধারণ ব্যক্তিত্বশালী একজন মানুষ।যৌথ পরিবারটির প্রবীণ কর্তা র কাছে ওনার সনির্বন্ধ অনুরোধ খানিকটা জমি দান করার।
প্রবীণ মানুষটি স্বভাবতই দ্বিধাগ্রস্ত ……. সন্তানসম ভালোবাসায় ঘিরে রাখা ফসলি জমির বুকে ইঁট বালি কংক্রিটের আগ্রাসন মেনে নেওয়ার যন্ত্রনায় বিদ্ধ। পরিবারের অন্য নবীন সদস্যরাও বাবার দ্বিধা দেখে সংকুচিত। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এলেন “অতিথি” মানুষটি। ভারী অথচ আন্তরিক গলায় বোঝালেন বৃদ্ধ মানুষটিকে। বললেন, “আপনি কি চান না আপনার এলাকার কিছু ছেলেপুলের হাতে কাজ আসুক ? আরো একটু সহজ হোক ঘরে ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছনোর ব্যবস্থা ? আপনি রাজি না হলে কিন্তু এই প্ল্যান্ট চলে যাবে বিহারের পূর্ণিয়ায় !”
রাজি হয়ে গেলেন বৃদ্ধ মানুষটি ! প্রায় ২২ বিঘা জমি দিয়ে দিলেন ভারত গ্যাস এর বটলিং প্ল্যান্ট এর জন্য। কর্মসংস্থান হলো বহু যুবকের। আর এখনতো পানিশালার এই প্ল্যান্ট রায়গঞ্জের জনজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গই !
ও হ্যাঁ, বৃদ্ধ অশীতিপর মানুষটি হলেন অসিতরঞ্জন সেনগুপ্ত ওরফে পাঁচকড়ি সেনগুপ্ত আর তাঁর বাড়িতে সেদিনের সেই অতিথিটি হলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় !!
বৃদ্ধ পাঁচকড়ি বাবু আজ আর নেই তবুও সোমনাথ বাবুর মৃত্যুতে সেনগুপ্ত পরিবারের নবীন প্রজন্ম আজ স্মৃতি ভারাক্রান্ত !!
শর্মিষ্ঠা ঘোষ
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৮
Rating:
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৮
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
সুচিন্তিত মতামত দিন