সন্ধ্যের অন্ধকারে নাড়ুর লোভ। সেই সমস্ত আনাচ কানাচ ধরা গোলাপি মোলায়েম ক্ষীরকদম ঠিক হেঁটে চলে কথা খুঁজে আনে জলে থইথই ছায়াদের। সেখানে রেলপাড়ের লোকোট্যাংকে এখনো হলুদ ছুটন্ত কুঝিকঝিক আলোর মধ্যে দেখা যায় ওদের। ওই ওরাই এখনো প্রথা মেনে বিজয়া ঢোকায় আমাদের ছেলেবেলার ঘরে ঘরে। কিশোর কাকার মা নারকোল নাড়ু খাইয়ে মাকে বলে, “আবার এসো আসছে বছর।” আবার মনে মনে বলে, “দাঁড়াও ওদের খবর দেইচি। আসুক, তোমাকে তোমার গেরস্তালির রাস্তায় পৌঁচে আসবেখন।”
ওরা মানে মুশকো মুশকো চেহারার গোয়ালারা। অ্যায়সা অ্যায়সা অ্যালুমিনিয়াম ক্যান অনায়াসে মাথায় তুলে দুফেরতা লুঙ্গি ওপরে তুলে বোট জুতো পরে কেমন হনহন করে হেঁটে যেতে পারে ওরা। ওদের গায়ে মোষ মোষ গন্ধ, মহিষাসুরমর্দিনীকে কাঁধে তোলার দায়িত্ব ওদের। এই এই শোন! ওই দেখ রোকেয়ার মা দূরে কচুশাক রান্না করে এনে দাঁড়িয়ে আছে। উমার নোলা লকলক। প্রতি বছর ওই খেয়ে তবেই রওনা...
সে যাক গে, বাবুদাদা বড্ড কড়া শাসনে বলে দিয়েছে ভিড়ের মধ্যে যাওয়া চলবে না, তাই বাইরের গেট ধরেই উঁকিঝুঁকি। বাবুদাদা...? নেই। বলেছিলো। এখন বলে না। সিঁদুর খেলার সুরের মধ্যে বিসর্জন ধীরে ধীরে ঘাসের পিঠে। আর তখনই, এখনই... এখনো জল কাঁপিয়ে, ঢাকের বাজনায় আসছে বছর আবার হবে, মনে পড়বে, হাত, হাতের কথা, শস্ত্র, পাপস্খলনের পরে আগুন, মিষ্টি... ধোঁয়ায় অস্তরাগ...
আগেকার অনেক কোমর নোয়ানো এখন ছবি। ছবির দিকে এগিয়ে চলেছে... শুভ বিজয়া দশমী। মঙ্গল হয় অনেক কিছু বিসর্জনের আড়ালে।
ঝমঝমঝম রেললাইনের চীৎকার। এবার লক্ষ্মী পুজো এগিয়ে এসেছে। পালিয়ে যেও না তোমার কৃতকর্মের চালচিত্র থেকে। এসো, বাঁচাতে দাঁড়িয়ে আছি শেষ চেষ্টা হাতে।
পৃথা রায় চৌধুরী
Reviewed by Pd
on
সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
Rating:
Reviewed by Pd
on
সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
সুচিন্তিত মতামত দিন