ট্রেনে ডাকাতির কবলে কোনদিন পড়তে হয়নি আমাকে. তাই প্রহর গুনছিলাম। মুহূর্তগুলি পার হতে চাচ্ছিল না। মাঝপথে ট্রেন থেমে আছে। কোথায় কে জানে! আমাদের কামরায় তখনও কেউ ওঠেনি। উত্কণ্ঠায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছিল। বিশেষ করে ওই হুমদো মুখো রেল পুলিশ দুটো কে দেখে একদিকে যেমন রাগ অন্যদিকে তেমনই হতাশা পেয়ে বসেছিল।
এরাও শেষ পর্যন্ত এই চক্রান্তে জড়িত ? আবার হাসতে হাসতে বলে কি ব্যাটারা - আভি ডাকু আয়েগা ইস কামরে মে অউর আপলোগোকা সবসে কিমটি সামান মংগ্নে লাগেগা....
দরজাতে ধূপধাপ করে কারা যেন উঠে আসছে.. আমি সন্তর্পণে আঙ্গুল থেকে সোনার আংটি খুলে সিটের নিচে চালান করে দিলাম....। প্রথমে একজন বৃদ্ধ লোক উঠে এলো.. খালি গা.. সাদা ধুতি হাঁটুর উপর.. সাথে ছয়-সাত বছরের বাচ্চা মেয়ে.. মেয়েটা প্রথম এগিয়ে এলো, বাবু হামে পিনে কা পানি চাহিয়ে। দিজিয়ে না বাবু। ভগবান আপ কা ভালা করে গা.....
বৃদ্ধটি ও একই কথা বলছে। পরে পরে বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ উঠলো। প্রত্যেকের হাতে পাত্র.. প্রত্যেকে খাওয়ার জল চাইছে.. রেল পুলিশ দুটো মাথা নিচু করে বসেছিল। ডাকাত পড়েছে কামরায়, অথচ কর্তব্য সম্পর্কে উদাসীন..
আমার চোখে জল চলে এসেছিল ডাকাত ও ডাকাতির প্রশ্রয়দাতা রেলপুলিশদের জন্য. চোখের জল মুছে নিলাম দ্রুত. এখন জলের অপচয় করার সময় না..
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন