ডিভাইডার উৎস
চার্মিনার ঠোঁটে আউড়ে যাওয়া
শব্দ আপ্তব্রহ্ম ধরে এগিয়ে যেতে-যেতে দেখলাম
তোমার শরীরী ক্ষেতখামার থেকে তেড়ে আসছে
ফসলখোর কীট । তোমার অগ্নীশ্বর লকলকে জিভ
ধোঁয়ার মধ্যে থেকে ধোঁয়া টেনে নিচ্ছে
রাধাপ্রান্তে পৌঁছে আবিষ্কার করি তুমি - তুমি যুগপৎ শ্রীকৃষ্ণ
আমি মথুরাবিরহী রাধা।
আর আমাদের প্রেম চেটে নিয়েছে কুরুক্ষেত্র !
আমাদের জন্মের সময় ন্যাপকিন বাঁধা অঙ্গ দেখে
কেউ বলেনি তুমি কৃষ্ণ আমি রাধা।
জন্মের হাসপাতালের বেডের ২০৬ টা ভিন্ন শিশুর
পরিচয় ছিল জল জরায়ুর জলে গর্ভজাত সন্তান,
জন্মের পরে মাকে বলতে শুনতাম
"পেটের শক্র ,গুয়ের ডিম" । তখনো তুমি আর আমি অভিন্ন
পুকুরে ন্যাংটো স্নানে ছিল না পাটপচা গন্ধ ,
বারো শেষ হয়ে তেরো চোদ্দ পনেরো ...
আর যেদিন শরীরের মথ ভেঙে প্রজাপতি হয়ে উঠলাম
আবিষ্কৃত হল তুমি আলাদা
আমাদের বুক আলাদা , পেট আলাদা , কাঁধ আলাদা
ভোটারকার্ড আলাদা , শোবার ঘর আলাদা , খাবারও ...
মস্তিষ্কের সাইকোলজিক্যাল রিং গুলোর মত ত্রি-ভূমি আলাদা
এমন কি রাগন্মোচন প্রক্রিয়াও আলাদা!
তোমার হাজার - হাজার বছরের পুরনো পূর্বপুরুষ
পৃথিবীর প্রথম রমণীর দিকে প্রথম যে ভ্রূণ-দেবতা ছুড়ে দিয়েছিল
তার থেকেই তৈরি হল আত্মা এবং মন , তারপরে জলে- স্থলে
কাঠবেড়ালী সরীসৃপ ,ইন্দ্র এবং মহিষাসুর।
তোমরা পৌরজঞ্জাল নিয়ে বিপদজনক ভাবে ভ্যাট ভরেছ
ভেবেছ যত ঢুকবে ভ্যাট ততই মানিয়ে নেবে
কখনো রবীন্দ্রনাথ শুনতে শুনতে অস্তগামী সূর্যের শেষ রঙ দেখিনি
কখনো শরীরের পাপ রেখে মনকে চালান দিই নি
নারীর প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের নীল দ্রবণে ডোবাই নি মহাকাল।
ছেলেটিকে পুরুষে রূপান্তরিত করার প্রয়াসে পুরুষদণ্ডভুতে
চামচ ঢুকিয়ে বলি নি- পুরুষ ধর্ষণ করলাম তোমায়। বলিনি,
ঠোঁটের ভিতরে জিভ পুরে 'নে শালা ৪০০ গ্যালন
হেমলক ছড়িয়ে দিলাম তোর শিরার বন্দরে ,
শাড়ীর ভাঁজে বিপদজনক খাঁজ লুকিয়ে বলতে পারিনি
এস নির্লিপ্ত মানুষ আটইঞ্চির গভীরতায় দেখিয়ে যাও
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লাম্পট্য।
ট্রেনে -বাসে - ফুটপাথে পাড়ার মোড়ে
ট্রাফিক সিগন্যাল রেডলাইটের নারীরা হেটে যায়
স্তন থেকে যৌনপত্রিকায় , মাতৃজঠর থেকে
কৌমর্যভাঙনের চিতায়।
কী করতে পারি আমি?
কবি এবং মাতাল , ঠগি ও গ্ল্যাডিয়েটদের
এক বিছানায় টেনে এনে বলতে কি পারি
শব্দ তুমি পরমব্রহ্ম হয়ে ওঠো?
শয়তান তুমি প্রেম বিষয়ক প্রকৃত উপমা !
কী করতে পারি!
আমার জাতনিরপেক্ষ জিভে চুকচুক আওয়াজ তুলে
বলব কি , শালীনতার অভিনয় থেকে বেরিয়ে এসো
ফাঁসুড়ের দল , নারীর যেখানে হৃদপিণ্ড আসলে ওখানে
কোন স্পন্দন নেই , আছে নরম-ময়দা গুলি
ওখানে শিল্প- সংস্কৃতির আত্মশ্লাঘা ।
কোনদিন সাধু এবং হরিসংকীর্তনের ভক্তিচোখ রাখিনি
মরার পরে তুলসী ও গঙ্গাজলের আশায়
গঙ্গায় নেমে পাছায় জমানো পাপ ধুয়ে আসিনি ,
যে ঋতুস্রাবের পরে আমার জন্ম হয়েছিল আকাশগঙ্গাকে
সাক্ষী রেখে , সেই আকাশগঙ্গায় একদিন মিলিয়ে যাব
এই একমাত্র সত্যর সামনে সোনালী বলতে পারে
আমি আমার মত , তুমি আমার মত নও
আমি আগুন মৃত্যু গুহাকে নিয়ে তিন-বল খেলি , তুমি নও
আমি জন্মের দেবী , জন্মের মধ্যেই মিলন খুঁজি , তুমি নও
আমি যুদ্ধের মধ্যে যুদ্ধকে চিৎকার করে বলি থাম
আর তোমার মৃতদেহ কোলে করি বলতে পারি
সকলেই আমার সন্তান ।।
সোনালী মিত্র
Reviewed by Pd
on
অক্টোবর ০৬, ২০১৫
Rating:
Reviewed by Pd
on
অক্টোবর ০৬, ২০১৫
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
সুচিন্তিত মতামত দিন