সৈয়দ ওয়ালী














থিয়েটার



সঙ্গম আসন্ন হলে
খুলে পড়ে সুবেশী আনন; 
প্রগাঢ় ঘুমের জলে গলে গেলে প্রবঞ্চক অভিরাম
ভেসে ওঠে ভবিতব্য, অনিবার্য কদাকার; 

এই ছাড়াছাড়ি 
বৈজ্ঞানিক; 
প্রেম ও ভানের চিরায়ত দ্বান্দিক থিয়েটার। 




অচেনা সে স্বর 



হয়তো চিনিইনি সে স্বর 
কিংবা চিনেও বুঝিনি মর্ম তার 
দীর্ঘশ্বাস বুক চিরে বাইরে আসতেই হুঁশ হল 
ঢলেছে বেলা, ভাঙ্গি ভাঙ্গি করছে হাট; 

তবে কি একাই হেঁটে যেতে হয় বিহারের পথ? 
কেইবা একা হাঁটে আজকাল? কেইবা পূজনীয়, বাবা দাদাদের মত অবিচল? 
তবে কি কালই পেন্ডুলাম? 
কালই খাচ্ছে গিলে আমাদের প্রসন্ন বাতিসব! 

তবুও কেউ কেউ একাই হেঁটে যায় কণ্টকী সাধনের পথ।




স্কেল 




বিক্রি করেনি ওরা; করবে না বিক্রি 
শির,  
শিরদাঁড়া; 
কবি, ফকির স্বভাবী নয়;   
যদিও দুনিয়া জুড়ে 
মাথাউঁচু মানুষের দাম কই!   
অর্থাভাব? 
মানুষেরই ছিল, মানুষেরই থাকে; 

না হে, সবাই পাপোষ নয়; 
লোভ ও লাভের পাঁকে ডুবে না সবাই;  

কেন যে একই স্কেলে মাপ রে মানুষ!




বাজারি সলা




নির্জলা ফিনিক গুলো থাক
উগড়ে গরল শিখে নাও
কি করে চাঁটতে হয় পা, মাখ্‌তে হয় তৈল যথা যন্ত্রে... 

প্রদত্ত প্রনয় নয় 
বিকিয়ে প্রকৃতি 
ভেজাল মালের তোড়ে বাজার মাতাও ...



 অহেতুক খুঁজছ মিনার



ততদিনে মরে যাবে সূর্যদেব
কোন এক বিশাল পাথর নাশ করে দেবে এই ক্ষিতি
কিংবা কেয়ামত, যার কথা শিশুকাল থেকে শুনি;

হে বিহগ
বৃথাই গুনছ ক্ষণ কোথায় বিহান
এ জাতি ভালবাসে গুহা যুগ সুদীর্ঘ রাত;

আমরা প্রকৃতই কামলা, গতর বশ্য জাত
ভিন জাতির গু মুত সাফ করা আমাগো পবিত্র কাম!
সস্তা মুল্যে বেচে শরীরের ঘাম, বাড়িয়েছি রেমিটেন্স, দেশের সুনাম!
আমাদের আছে এক অতিকায় টাকার গুদাম!

হে বিহগ
বৃথাই গুনছ ক্ষণ
এ ভূমির আকাশপ্রান্তে পোতা আছে অতল খাঁড়ি, অহেতুক খুঁজছ মিনার।


ধাত্রী নেই 



ধাত্রী অভাবে থেমে গেছে বুঝি 
প্রবুদ্ধ অর্চির কলা? 
স্খলিত প্রতিবেশ কিইবা দেবে আর
বিষবৃক্ষ ছড়াচ্ছে ডালপালা;

বাবুই নেই বলেই
কাকেদের খেয়োখেয়ি উদ্ভট সার্কাস দেখি রোজ
শ্রান্ত মনে জমে চলেছে পাথুরে বিপন্নতা ...

নৈষ্ঠিক বাঁশিওয়ালা কেন কাঁপে ভয়ে!
তবে কি ইতরেরা অসুরেরা সবই গিলে খাবে? 

প্রজাপতি এবং  



প্রজাপতি রাতে ওড়ে না বলেই কি, খুনিরা
বেছে নেয় রাত? 
ভাগ্যিস কোন খুনই প্রজাপতি দেখতে পায় না (?) 
দেখতে পায় না মানুষের বিকৃত কাম!


মুখোশ টা মেকাপ টা 



মুখোশ টা খুলে রাখলেই 
ভাল করতে 
অভিসার টা আকাশ কে ছুঁতে পারত
কিংবা পৌছুতে পারত প্রাপ্তির আত্মায়; 
আমি তো তোমার দখলেই থাকি, 
যতটা দখলে থাকে তোমার ভ্যানিটি ব্যাগ, 
তবুও কেন যে আতংকে ভোগ! 

নৌকো জলেই ভাসে
অথচ কুমিরের মত প্রাণীরা উভচর; পাহাড়ের বন্ধু
শুধুই যে মেঘ, এ সত্য সাধুরা জানে। 
পথিকও পথে নামবেই, ঘরের লোভ তাকে কেন যে দেখাও!

মেকাপটা পুরু করে নাটক করার এখনো কি দরকার আছে?


কিনার  



কুহক খাঁড়ির সেই কিনারের খোঁজ
পান্থও চিনে ফেলে একদিন, বাঁচা মরার মাঝখানে যে কিনার, 
পুল সিরাতের মত ঝুলে থাকে, চালায় শাসন; 

খরগোশ কাছিমের গল্প? 
কেন যে শোনাতে চাও শিশুতোষ?
গহনের 
খননের 
পথ ধরে যে জনন, 
সেইসব জ্বলনের সত্তায় সোমত্ত মানুষের 
কপাল লিখন লেখা থাকে; সুয়োরানী নয়
ঘুঁটে কুড়ানির সুখ দুখে বেঁচে আছে আজকের গল্প...




গ্রামীণ জীবন


১.
মা ঝি দের পায়ে পায়ে
হেঁসেল থেকে ছাদনা তলা ঘুরতে থাকে শালিক গুলো রাত অবধি...
শালিক গুলো হাঁটতে থাকে খুঁটতে থাকে পোকামাকড় শস্য দানা
মা ঝি দের পায়ে পায়ে... 
শালিক গুলো বুনতে থাকে স্বপ্ন ব্যানা...

২.
খোড়লের ফাঁক গলে
জ্বলে,
জ্বল জ্বলে চোখ জোড়া
জ্বলে রাতভর; বেবাক হুতুম
এভাবেই
চোখ রাখে গ্রামের উপর...

৩.
কোথা থেকে ছুটে এলো ধবল ছানাগুলো হাঁসের!
প্যাক প্যাক প্যাক স্বরে
আষাঢ়ের কাদাজলে
সমানে দাবড়ে গেল বাড়ির উঠোন!

৪.
কখনো ঝিমিয়ে কখনো ঘুমিয়ে
কখনও
শুয়ে শুয়ে লেজ নেড়ে
পার করে সারাদিন
বাড়ির কুকুর;
রাত হলেই সে ভিন্ন পশু...

৫. (ভ্যান ওয়ালার দর্শন ) 

ম্যালা রাম ভটভটি আর 
আলম সাধুর ঠাপে 
ভাই, গিরাম আর গিরাম নাই, হয়্যা গ্যাছে টাউন... 

৬. (রাইতের বেলার কথা )

তুমার তেইস কি কইরে মাইর তে হয় 
আমি, ভালো কইরেই জানি 
দেবানি বুঝায়ে দেবানি
রাইত টা পার হোক...




সৈয়দ ওয়ালী সৈয়দ ওয়ালী Reviewed by Pd on মে ০৯, ২০১৫ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.