মৌ দাশগুপ্তা









ধর্ষনের নেপথ্যে


পুরাণ বলে , বিস্মৃত সেই আদিকালে,বিধাতা নামক আদিপুরুষের ইচ্ছানুসারে,
স্বয়ম্ভূ বিবস্বত মনু জন্ম দিলেন আদিমানুষের,মেয়েমানুষের জঠর ছাড়াই,
(না,মেয়েমানুষের কথা কেউ বলেনি), সেদিন থেকেই মানুষ আর মেয়েমানুষ আলাদা।
পুরুষের মন ভোলাতে, নর্ম সহচরী হয়ে রতি ক্রিয়ায় তার আবির্ভাব,
মেয়েজাতটা শুধুমাত্র পুরুষভোগ্যা পণ্য,যেমন বীরভোগ্যা বসুন্ধরা!
যদিও লিখিতরূপে সে কাহিনী উহ্যই রেখে গেছেন আমাদের পর্বপুরুষেরা,
তবু মুখে মুখে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে কান ফেরতা হয়েছে সে কাহিনী।
তিল থেকে তাল হয়ে নতুন কাহিনী মন মজিয়েছে নতুন প্রজন্মের।
বিকৃতকাম মস্তিষ্কে পুরুষত্ব রূপ নিয়েছে ধর্ষনকারীর, আর অবিরাম উস্কেছে, 
‘নারী কিনা নরকের দ্বার, যে দ্বারপথে বহির্গমন তোমার,
রক্তাক্ত করে দাও মাতৃভূমি ,যে অঙ্গ হতে সন্তান হয়ে তোমার উৎপত্তি । 
জীবনের প্রথম অমৃতের উৎসস্থল ক্ষতবিক্ষত হোক নখরাঘাতে, নিষ্ঠুর দংশনে,
নারী শরীর জুড়ে খোদাই করে দাও পাশবিক পুরুষাকারের কামার্ত উল্লাস,
পৌরুষের দমকে নারীদেহে লিখে যাও স্ফূর্তির মহাকাব্য।
ভুলে যাক ওরাও মানুষ, আধমরা হয়ে বেঁচে থাক শুধু মেয়েমানুষ হয়ে।‘
শুনে যাও,মানুষরূপী না মানুষের দল, ধর্ষিতা অসহায় মেয়েটি সেই আমি,
তোমার জন্মদাত্রী, তোমায় আয়ুবৃদ্ধির মানত রাখা প্রেমময়ী বধু তোমার,
তোমার শ্রীবৃদ্ধির কামনায় ভগবানের সামনে নতজানু তোমার সহোদরা।
তোমাতেই আশ্রয় আর নিরাপত্তা খোঁজা আত্মজা,তোমার প্রিয়তমা।
‘তৃণাদপিহীন’ জীবন উজিয়ে আজও আমরা জীবনমুখী, 
আমাদের জন্মেরও নেই শেষ,আমাদের মৃত্যুতেও নেই শেষ।
শুধু জেনো,সর্বংসহা মাটির বুকের গভীরে ফুসছে লাভার সমুদ্র,
ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে, প্রতীক্ষা শুধু শেষ বিস্ফোরণের।

কলকাতা ।


মৌ দাশগুপ্তা মৌ দাশগুপ্তা Reviewed by Pd on জুন ২৭, ২০১৩ Rating: 5

২টি মন্তব্য:

সুচিন্তিত মতামত দিন

banner image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.