প্রিয়দীপ / অন্ধ অবতার

অন্ধ অবতার !

প্রি য় দী প 

মুখ তুইল্যা চাহ্ । কান পাইতা হোন  -
ব্রহ্মাণ্ডে আইজকা তুই একা নস।দ্যাশে বোবায় ধরছে
আরো মা’গোয়।

মালতী, হ্যাস্তাছস !
আমারে ভরসা নাই ? বিপিনের মাইয়ার কাছে হুইন্যা দ্যাখ !
কাগজ পইর‍্যা পইর‍্যা হুনাইতেছিল ওর বাপেরে ।
সদরের ইউনিয়নে, ছবিও দেইহ্যা আইল্যাম –
রাজা বাদশার শহর !
দুনিয়ার  সব রঙিন বাতি ঠ্যাইসা, ঝকমক করা সড়ক।

ওরা কয় রাজপথ –
হেই নাহি আগল্যায় স্বদেশের বুক। ন্যাতাজি গান্ধীজী ‘র চরণ মাখা সড়ক।
স্বদেশের সড়ক বাইয়্যা চিক্কুরে আইজো গলা ফাটায়
আন্না, রাম, কত রঙ করা মুখ।
ব্যাবাগ চিক্কুরে কান খাড়া রাহাই দায়।

জানোস -
হেই হব্দ কানে লইয়াও খারাইয়া থাহে, কত ফটোকয়ালা।
ঝোলায় খুচুর খুচুর ছবি ধরে।ঘুইর‍্যা ... বেইচ্যা প্যাট ভরে।

- আর অবতার ?
ভালো জিগাইছস মণি’র মা ।
হ্যাথো, আমাগো পাড়ার জগন্নাথ। ওরেই সব লোক ঘিইর‍্যা থাহে।
টু হব্দ কইরার জো নাই। মুখ টিইপ্যা টিইপ্যা কথা কয়, আর ঘাড় নাড়ে।
যন্ত্র টিইপ্যা টিইপ্যা হিল্লি দিল্লি সব দ্যাহে।কথা কয়। 

যত ভিড় বারে, তত হুঙ্কার ছারে ... কুনো ছাড় লাই ।

হালার ন্যাতা, শুখনা  মুড়ি ভেজা যত কথা  হেই নাহি সবজান্তা ।
ভরা লোকে, চিক্কুরে কইছি জানোয়ার। পিণ্ডি চটকাই তর।
হি হি হি ...
ইউনিয়নে খলপার ব্যাড়ায় ঝোলা গান্ধী’ও হাসে,

সুভাষ ও হাসে। বুক পিঠে লাথি খাইয়াও -

খিল খিল কইর‍্যা  হাইস্যা মরি আমিও ...

- মণি’র বাপ –
একটু জিরান। মাথা খারাপ কইরেন না ।
নারে মালতী, মাথা ঠিক’ ই আছে।  তাইলে হোন খবর –

সাই সাই মোটর গাড়ি, ছুইট্যা যায় ছুইট্যা যায় -
ভিত্রে মহাভারত, হুনছস তো হেইড্যা ? - একা দ্রৌপদী আর পঞ্চ পাণ্ডব ।
বাইরে ব্যাবাগ রাজ অবতার! তারই ভিত্রে ...
হাজার আলোয় জ্বলত্যাছে একা কমলা।
কামুকের ক্ষিধ্যায় লণ্ডভণ্ড  মাইয়াডার ভূষণ-
আমাগো জন্মের অধিষ্ঠাত্রী।

মালতী রে ,
বুক ধইরা আসে, ভাইঙ্গা তছনছ হইয়া যায় –
চোখ ঠ্যাইল্যা আইসে বটতলা ছুইয়া আলপথ ।
আমাগো মণি।
খুবলানো গতর, থ্যাতলানো মাথা।
হা’কইরা  আছিল শূন্যে তাকাইয়া –
ওর চোখ’ডা তো আমিই বন্ধ কইরা দিলাম।

যারে ঘুম পারাইলাম, তারেই আগুন দিলাম!

মালতী, আর হওয়ান যাইবো না ...

আজও দিমু আগুন - 
বসন প্যাচাইয়া মশাল জ্বালা – মোমবাতির কাম নাই।
চল বটতলা ছুইয়া আলপথ,
সব মণি’র লাইগ্যা রাজ অবতারে আগুন দিমু
দেহি কদ্দিন চুপ থাকে রাজপথ।


উত্তরবঙ্গ ।